
অনলাইন ডেস্ক।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের যৌথরক্ষণাবেক্ষণ আরও উন্নত করতে এটাকে আন্তঃসীমান্ত সংরক্ষিত অঞ্চল ঘোষণার প্রস্তাব এসেছে। ভারতের ‘সুন্দরবানস বায়োস্পিয়ার রিজার্ভ’ নামে একটি সংস্থা এই প্রস্তাব দিয়েছে।
সংস্থাটি একই সময়ে ভারত ও পাকিস্তান সীমান্তে অবস্থিত সিয়াচেন উপত্যকাকেও আন্তঃসীমান্ত সংরক্ষিত অঞ্চল ঘোষণার প্রস্তাব দিয়েছে।
সংস্থাটি মনে করছে, এশিয়ার এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা আন্তঃসীমান্ত সংরক্ষিত অঞ্চলের মর্যাদা পেলে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ লাভবান হবে।
সুন্দরবানস বায়োস্পিয়ার রিজার্ভের পরিচালক প্রদীপ বায়স বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশ যাতে সুন্দরবন যৌথভাবে রক্ষণাবেক্ষণ থেকে সবচেয়ে বেশি লাভবান হতে পারে, সেই বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা আমরা পুরো ম্যানগ্রোভ বনটিকে আন্তঃসীমান্ত সংরক্ষিত অঞ্চল ঘোষণার প্রস্তাব দিয়েছি।’
তিনি প্রস্তাবটির ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, আন্তঃসীমান্ত সংরক্ষিত অঞ্চল নতুন বিষয় নয়। আমেরিকা আর আফ্রিকাতে এর ভুরি ভুরি উদাহরণ রয়েছে।
আর আন্তঃসীমান্ত সংরক্ষিত অঞ্চল ঘোষণা হলে এসব বনে রাষ্ট্রীয় সীমানা বা কাঁটা তারের বেড়া থাকে না। এতে বনের অবোধ প্রাণির পাশাপাশি মানুষও অবাধে যাতায়াত করতে পারে। তবে অনুমতি ছাড়া কেউ এই বনে চলাফেরা করতে পারে না।
মিস্টার প্রদীপ বলেন, তাদের প্রস্তাব গ্রহীত হলে তথ্য, বুদ্ধিবৃত্তিক উপাত্ত আর প্রযুক্তি বিনিময়ের মাধ্যমে ভারত ও বাংলাদেশ উপকৃত হবে। আর তখনই সুন্দরবনে কার্গো ভেসেলের অবাধ যাতায়াত বন্ধ করা যাবে। তিনি আর জানান, তাদের এই প্রস্তাব শিগগির ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। আর সবকিছু ইতিবাচকভাবে এগিয়ে গেলে এই ব্যাপারে ভারত ও বাংলাদেশ সমঝোতা চুক্তি করতে পারবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বাংলাদেশ ও ভারতের আন্তঃসীমান্ত সম্পর্কিত একটি যৌথ বৈঠকে আন্তঃসীমান্ত সংরক্ষিত অঞ্চল ঘোষণার প্রস্তাবটি উত্থাপিত হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধান বন সংরক্ষক (সিসিএফ) মো. ইউনুস আলী, বন সংরক্ষক (সিএফ) তপন দেসহ পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশের সুন্দরবনে ট্যাংকার ডুবে তেল ছড়িয়ে পড়ায় ভারতও উদ্বেগ জানিয়েছে। বৈঠকে এটাও বলা হয়, সুন্দরবনে এখন মাত্র ১৮২টি বাঘ রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের সুন্দরবনে ১০৬টি এবং ভারতের সুন্দরবনে ৭৬টি বাঘ শনাক্ত হয়েছে।
সুন্দরবানস বায়োস্পিয়ার রিজার্ভের প্রস্তাবকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ডবলিউডবলিউএফ- ইন্ডিয়ার আবহাওয়া পরিবর্তন ও অভিযোজন কর্মসূচির প্রধান অনুরাগ ডেঙ্গা। তিনি বলেন, সুন্দরবনকে আন্তঃসীমান্ত সংরক্ষিত অঞ্চল ঘোষণার প্রস্তাব গৃহীত হলে বিশ্বের এই সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনভূমির ব্যবস্থাপনা অধিকতর সুফলদায়ী হবে। তার ভাষায়, ‘এখন সুন্দরবন নিয়ে বলতে গেলে উভয় দেশের মধ্যে তেমন কোনো তথ্য বিনিময় হয় না। আমরা এটাও বলতে পারছি না যে উভয় দেশের বন কর্মকর্তারা একই বাঘকে দুইবার গুণে ফেলেছেন কিনা।’খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
পাঠকের মতামত